পবিত্র আশুরা
মহররম,
হিজরি সন এর প্রথম মাস। এর অর্থ তাৎপর্যপূর্ণ, মর্যাদাপূর্ণ। হিজরি সন এর এই মর্যাদাপূর্ণ মহররম মাস এর ১০ তারিখ হলো পবিত্র আশুরা। আরবি "আশারা" থেকে এসেছে "আশুরা" শব্দটি এসেছে। যার অর্থ দশ। মহররম মাসের ১০ তারিখে ১০টি বড় বড় ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। তাই এই মহররমের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। সৃষ্টির শুরু থেকে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে আশুরার তাৎপর্য স্বীকৃত। হিজরি সন প্রবর্তন মহররম মাসকে আরও বেশি স্মরণীয় করেছে। ইতিহাস এর এক জ্বলন্ত সাক্ষী এই মহররম মাস।
পবিত্র
কোরআন মাজিদ
এ বর্ণিত
আছে,
" আকাশ মণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন হতেই
আল্লাহর কাছে ও আল্লাহর বিধানে মাসের সংখ্যা ১২টি। এর মধ্যে চারটি মাসে যুদ্ধ
নিষিদ্ধ। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান,
সুতরাং এই মাসগুলোতে তোমরা যুদ্ধ করে
নিজেদের প্রতি জুলুম করো না।"
(সূরা
আত-তাওবা;
আয়াত: ৩৬)
অর্থাৎ, সৃষ্টির সূচনালগ্ন
থেকে আল্লাহ তায়ালা ১২টি মাস নির্ধারণ করে দেন। তন্মধ্যে চারটি মাস বিশেষ গুরুত্ব
ও তাৎপর্য বহন করে। ওই চারটি মাস এর বিস্তারিত বর্ণনা হযরত আবু হুরায়রা (রা.)
সূত্রে বর্ণিত, হাদিসে
উল্লিখিত হয়েছে,
নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন,
(বুখারি-৪৬৬২, মুসলিম-১৬৭৯)।
এক বছরে ১২ মাস। এর
মধ্যে চার মাস বিশেষ তাৎপর্যের অধিকারী। এর মধ্যে তিন মাস ধারাবাহিকভাবে (জিলক্বাদ, জিলহজ ও মহররম) এবং
চতুর্থ মাস মুজর গোত্রের রজব মাস।
আশুরা
: মহররম মাস সম্মানিত হওয়ার মধ্যে বিশেষ একটি কারণ হচ্ছে- আশুরা (মহররমের ১০
তারিখ)। এ পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে আশুরার দিনে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা ও হৃদয়বিদারক
কাহিনী সংঘটিত হয়েছে।
মহররম মাস এর এই আশুরার কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করা হলো;
আল্লাহ
তাআলা আশুরার দিন
পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। তার ইচ্ছায় এই আশুরার দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে।
হযরত
আদম (আ.)-কে আশুরার
দিন জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়। আবার এই আশুরার দিনই আল্লাহ তাআলা আদম
(আ.)-এর দোয়া কবুল করেন। এছাড়াও আশুরার দিনে মানবজাতির মা হাওয়া (আ.)-এর সঙ্গে
আরাফার ময়দানে পৃথিবীতে প্রথম সাক্ষাৎ হয় আদম (আ.)-এর।
হযরত ইবরাহিম (আ.)-কে
অত্যাচারী বাদশাহ নমরুদ অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করেছিল। তিনি অগ্নিকুণ্ডে ৪০ দিন
থাকার পর মহররমের ১০ তারিখ অর্থাৎ আশুরার দিনে মুক্তি লাভ করেন।
আল্লাহর নবী আইয়ুব (আ.) ১৮ বছর কঠিন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি আশুরার দিনে মহান আল্লাহর রহমতে পূর্ণ সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য লাভ করেন।
হযরত ইউসুফ (আ.) ছিলেন হযরত ইয়াকুব (আ.)-এর ১২ সন্তানের একজন। ১১ ভাই ষড়যন্ত্র করে তাকে কূপে ফেলে দেয়। মহান আল্লাহর অনুগ্রহে এক বণিক দল তাকে উদ্ধার করে। এরপর বণিকদলের প্রধান মিশরে গিয়ে তাকে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করে দেন। পরবর্তীতে দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদ লাভ করেন। এরপর ১০ই মহররম তথা আশুরার দিন, দীর্ঘ ৪০ বছর পর তিনি পিতা আইয়ুব (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
আল্লাহ তায়ালার
আরেক নবী হযরত
ইউনুস (আ.)। তিনি জাতির লোকদের প্রতি হতাশ হয়ে পড়েন। এরপর নদী অতিক্রম করে দেশ
ছেড়ে চলে যেতে চান। পথিমধ্যে মাঝ নদীতে পতিত হন। আর তখন তাকে একটি বড় মাছ (তিমি মাছ) গিলে ফেলে। মাছের
পেটে তিনি ৪০ দিন ছিলেন। এরপর ১০ মহররম সেই আশুরার দিনই আল্লাহর রহমতে সেই মাছ তাকে নদীর তীরে
ফেলে দেয় এবং তিনি মুক্তি লাভ করেন।
ঈসা (আ.)-কে তার জাতির লোকেরা হত্যা
করার চেষ্টা করে। মহররমের ১০ তারিখ মহান আল্লাহ তাকে আসমানে উঠিয়ে নেন।
কারবালার
মর্মান্তিক বিয়োগান্তক ঘটনা। মহররম মাসের আশুরার দিনে আল্লাহর প্রিয় নবী (সা.)-এর প্রিয়
নাতি হোসাইন (রা.) কারবালা প্রান্তরে শাহাদাত বরণ করেন।
আশুরার ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা
গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক ঘটনা হচ্ছে- হযরত মুসা (আ.)-এর ফিরআউনের অত্যাচার থেকে
নিষ্কৃতি লাভ। আশুরার দিনে
মহান আল্লাহ তায়ালা চিরকালের জন্য লোহিত সাগরে ডুবিয়ে শিক্ষা দিয়েছিলেন ভ্রান্ত
খোদার দাবিদার ফিরআউন ও তার বিশাল বাহিনী।
অনেকে
মনে করেন,
ফিরআউন নীলনদে ডুবেছিল। ঐতিহাসিকদের
বর্ণনা অনুযায়ী এই ধারণা ভুল। বরং তাকে মহররম মাসের আশুরার দিনে লোহিত সাগরে ডুবিয়ে
বিশ্ববাসীকে শিক্ষা দেওয়া হয়। এ ঘটনা ইমাম বুখারি তার কিতাবে এভাবে বর্ণনা করেন- হযরত ইবনে আব্বাস (রা.)
সূত্রে বর্ণিত, তিনি
বলেন,
মহানবী (সা.) যখন
হিজরত করে মদিনা পৌঁছেন, তখন
তিনি দেখলেন যে মদিনার ইহুদি সম্প্রদায় আশুরার দিনে রোজা পালন করছে।
তিনি
তাদের জিজ্ঞেস করেন, আশুরার
দিনে তোমরা রোজা রেখেছ কেন? তারা
উত্তর দিল, এই
দিনটি অনেক বড়। এই পবিত্র আশুরার দিনে মহান আল্লাহ মুসা (আ.) ও বনি
ইসরাইলকে ফিরআউনের কবল থেকে রক্ষা করেছিলেন আর ফিরআউন ও তার বাহিনী কিবতি
সম্প্রদায়কে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। এর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ হযরত মুসা (আ.) রোজা
রাখতেন, তাই
আমরাও আশুরার রোজা
পালন করে থাকি। তাদের উত্তর শুনে নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, হযরত মুসা (আ.)-এর
কৃতজ্ঞতার অনুসরণে আমরা তাদের চেয়ে আশুরার প্রতি অধিক হকদার। অতঃপর তিনি নিজে মহররম মাসে আশুরার রোজা রাখেন
এবং উম্মতদেরও আশুরার রোজা
রাখতে নির্দেশ প্রদান করেন।
(বুখারি-৩৩৯৭, মুসলিম-১১৩৯)
উপরোক্ত হাদিসের আলোকে সুস্পষ্ট যে, মহররম মাসের আশুরার ঐতিহ্য
আবহমানকাল থেকে চলে আসছে। অনেকেই না বুঝে অথবা ভ্রান্ত প্ররোচনায় পড়ে আশুরার
ঐতিহ্য বলতে রাসুল (সা.)-এর প্রিয়তম দৌহিত্র, জান্নাতের যুবকদের দলপতি হযরত হুসাইন (রা.)-এর
শাহাদাত ও নবী পরিবারের কয়েকজন সম্মানিত সদস্যের রক্তে রঞ্জিত কারবালার ইতিহাসকেই আশুরার ইতিহাস বুঝে থাকে। তাদের
অবস্থা ও কার্যাদি অবলোকন করে মনে হয়, কারবালার ইতিহাসকে ঘিরেই আশুরার সব
ঐতিহ্য, এতেই
রয়েছে আশুরার সব রহস্য।
কিন্তু মহররম
মাসের আশুরার ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে
প্রাচীনকাল থেকেই। হযরত
হুসাইন (রা.)-এর মর্মান্তিক শাহাদাতের ঘটনার অনেক আগ থেকেই মহররম মসের আশুরা অনেক
তাৎপর্যপূর্ণ ও রহস্যঘেরা দিন। কারণ কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হয় ৬১ হিজরির ১০ই মহররম। আর আশুরার
রোজার প্রচলন চলে আসছে ইসলাম আবির্ভাবেরও বহুকাল আগ থেকে। তবে এ কথা অনস্বীকার্য
যে আবহমানকাল থেকে মহররম মাসের এই
আশুরার দিনে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা যেমন অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি হিজরি ৬১ সনে
আশুরার দিন কারবালার ময়দানের দুঃখজনক ঘটনাও মুসলিম জাতির জন্য অতিশয় হৃদয়বিদারক ও
বেদনাদায়ক। প্রতিবছর মহররম মাসের আশুরার দিন আমাদের এই দুঃখজনক
ঘটনাই স্মরণ করিয়ে দেয়।
হযরত হুসাইন (রা.)-এর
উদ্দেশ্য ও আদর্শ বাস্তব জীবনে অনুসরণ করাই হবে আশুরার দিনের এ ঘটনার সঠিক মর্ম
অনুধাবনের বহিঃপ্রকাশ। হযরত
হুসাইন (রা.)-ও রাসুলে করিম (সা.)-এর প্রতি মুহব্বত ও আন্তরিকতার একমাত্র পরিচায়ক।
আশুরার রোজা : মহররম
মাসে রোজা রাখা সম্পর্কে অনেক বিশুদ্ধ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। যেমন ওপরে বর্ণিত
হয়েছে। কিন্তু বিশেষভাবে আশুরা,
অর্থাৎ মহররমের ১০ তারিখে রোজা রাখার
ফজিলত সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। একটি হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয়, রমজান মাসের রোজা ফরজ
হওয়ার আগে মহররম মাসের
আশুরার রোজা উম্মতে মুহাম্মদীর ওপর ফরজ ছিল। পরবর্তী সময়ে অবশ্যই ঐ বিধান রহিত হয়ে যায়
এবং তা নফলে পরিণত হয়। হাদিস শরিফে হযরত জাবের (রা.) সূত্রে বর্ণিত আছে- 'রাসুলুল্লাহ (সা.)
আমাদের মহররম মাসে
আশুরার রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং এর প্রতি উৎসাহিত করতেন। এ বিষয়ে নিয়মিত তিনি
আমাদের খবরাখবর নিতেন। যখন রমজানের রোজা ফরজ করা হলো, তখন আশুরার রোজার
ব্যাপারে তিনি আমাদের নির্দেশও দিতেন না এবং আশুরার রোজা রাখতে
নিষেধও করতেন না। আর এ বিষয়ে তিনি আমাদের খবরাখবরও নিতেন না। (মুসলিম শরিফ-১১২৮)
ঐ হাদিসের
আলোকে মহররম মাসের আশুরাররোজার শ্রেষ্ঠত্ব প্রতীয়মান হয়। এমনকি ঐ সময়ে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। বর্তমানে এই
আশুরার রোজা
যদিও নফল, কিন্তু
অন্যান্য নফল রোজার তুলনায় আশুরার রোজা অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
হযরত ইবনে আব্বাস (রা.)
সূত্রে বর্ণিত, তিনি
বলেন-
রাসুল (সা.) আশুরা ও রমজানের রোজা সম্পর্কে যেরূপ গুরুত্ব প্রদান করতেন, অন্য কোনো রোজা
সম্পর্কে সেরূপ গুরুত্বারোপ করতেন না।
(বুখারি ও মুসলিম)
(বুখারি ও মুসলিম)
হযরত হাফসা (রা.)
সূত্রে বর্ণিত, তিনি
বলেন, রাসুল
(সা.) চারটি কাজ কখনো ছেড়ে দিতেন না। তার মধ্যে একটি হলো মহররম মাসের আশুরার
রোজা।(নাসায়ি শরিফ)
হযরত আবু মুসা আশআরি
(রা.) বর্ণনা করেন, আশুরার
দিন ইহুদিরা ঈদ পালন করতো।
রাসুল (সা.) সাহাবিদের সেদিন রোজা রাখতে নির্দেশ দিলেন। (বুখারি-২০০৫, মুসলিম-১১৩১)
হযরত ইবনে ওমর (রা.)
সূত্রে একটি হাদিস বর্ণিত আছে,
জাহিলিয়াতের যুগে
কাফেররা আশুরার দিন রোজা রাখতো। তাই রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামও আশুরার দিন রোজা রাখতেন; কিন্তু যখন রমজানের
রোজা ফরজ হয়, তখন
তাদের আশুরার
রোজা রাখা বা
না রাখার ব্যাপারে স্বাধীনতা প্রদান করা হয়। (মুসলিম-১১৩৬)
কাফেররা অন্ধকার যুগে আশুরার দিন রোজা রাখার উত্তর এটা হতে পারে যে তারা প্রতিবছর
মহররমের ১০ তারিখে কাবা শরিফকে গেলাফ পরিধান করাতো। যেমনটি বুখারি
শরিফে রয়েছে।(হাদিস
নম্বর : ১৫৮২)
হযরত আয়েশা (রা.)এর সূত্রে বর্ণিত আছে, তবুও এর উত্তর দিতে গিয়ে বিখ্যাত
তাবেয়ি হযরত
ইকরামা(রা.) বলেন- অন্ধকার যুগে কাফেররা একটি অনেক বড় অপরাধ (তাদের দৃষ্টিতে) করে
বসে। তাদের বলা হলো, তোমরা
আশুরার দিন রোজা রাখো, তাহলে
তোমাদের গুনাহ মাফ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তখন থেকে কোরাইশ বংশের লোকেরা মহররম মাসের আশুরার দিন
রোজা রাখতে শুরু করে।(ফতহুল বারি খ.-৪ পৃ.-৭৭৩)
আশুরার রোজার ফজিলত : রাসুলুল্লাহ (সা.) আশুরার রোজা নিজে পালন করেছেন এবং উম্মতকে আশুরার রোজা রাখার প্রতি উৎসাহিত
করেছেন। তাই আশুরার রোজা রাখার
পূর্ণ অনুসরণ ও আনুগত্যের মধ্যেই নিহিত রয়েছে উম্মতের কল্যাণ। এ ছাড়া অসংখ্য
হাদিসে আশুরার রোজার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আশুরা রোজা রাখার বিষয়ে কয়েকটি হাদিস হলো- 'হজরত আবু কাতাদা
(রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল
(সা.)-কে আশুরার রোজার ফজিলত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আশুরার রোজা বিগত বছরের গুনাহ মুছে দেয়।
(মুসলিম-১১৬২)। 'রাসুল
(সা.) বলেন- 'রমজান
মাসের রোজার পর সর্বোত্তম রোজা আল্লাহর মাস মহররমের আশুরার রোজা।'
(সুনানে কুবরা-৪২১০)
আশুরার রোজা ও ইহুদি সম্প্রদায় : মুসলিম শরিফে হযরত ইবনে আব্বাস (রা.)
থেকে বর্ণিত- 'মহানবী
(সা.) যখন মহররম মাসের
আশুরার দিনে রোজা রাখেন এবং অন্যদেরও আশুরার রোজা রাখার নির্দেশ প্রদান করেন, তখন সাহাবিরা অবাক
হয়ে বলেন, ইয়া
রাসুলাল্লাহ! ইহুদি-নাসারারা তো এই দিনটিকে বড়দিন মনে করে। (আমরা যদি এই দিনে আশুরার রোজা রাখি, তাহলে তো তাদের সঙ্গে
সামঞ্জস্য হবে। তাদের প্রশ্নের উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, 'তারা
যেহেতু এদিন একটি রোজা পালন করে) আগামী বছর ইনশাআল্লাহ আমরা এই ১০ তারিখের সঙ্গে ৯
তারিখ মিলিয়ে দুই দিন আশুরার
রোজা পালন করবো।
(মুসলিম-১১৩৪)
আশুরার দিনে অন্য একটি আমল : হযরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আশুরার দিনে আপন পরিবার-পরিজনের মধ্যে পর্যাপ্ত খানাপিনার ব্যবস্থা করবে, আল্লাহপাক পুরো বছর তার রিজিকে বরকত দান করবেন। (তাবরানি : ৯৩০৩)
সার কথাঃ
* আশুরা একটি গুরত্বপূর্ণ ইসলামী পর্ব।
* আশুরাতে সাওম পালন করা সুন্নাত।
* আশুরার সাওম দুদিন পালন করা উচিত।
মুহাররম মাসের নবম ও দশম তারিখে। যদি নবম তারিখে সওম পালন সম্ভব না হয় তবে দশম ও
একাদশ তারিখে সওম পালন করবে। মনে রাখতে হবে নবম ও দশম তারিখে দুটো সওম পালন করা
উত্তম।
* আশুরার জন্য শরীয়ত অনুমোদিত বিশেষ আমল
হল এই সওম পালন। এ ছাড়া আশুরার অন্য কোন আমল নেই।
* কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার সাথে আশুরার
কোন সম্পর্ক নেই। আশুরার মর্যাদা বৃদ্ধিতে বা কমাতে এর কোন ভূমিকা নেই।
* কারবালার ইতিহাস স্মরণে আশুরা পালনের
নামে যে সকল মাতম, মর্সিয়া,তাযিয়া মিছিল, শরীর রক্তাক্ত করাসহ
যা কিছু করা হয় এর সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। ইসলাম এ সকল কার্যকলাপের
অনুমোদন দেয় না। এগুলো সন্দেহাতীত ভাবে বিদআত। এগুলো পরিহার করে চলা ও অন্যদের
পরিহার করতে উৎসাহিত করা রসূলে কারীম (সঃ) সুন্নাহ অনুসারী সকল ঈমানদারের কর্তব্য।
পরিশেষে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে এই কামনা করি, “আল্লাহ আপনি আমাদের প্রত্যেককে আপনার দেওয়া বিধি-বিধান সমূহ যথাযথ অনুসরণ করার তাওফিক দান করুণ”। আমিন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url